ঢাকা ০৪:২২ পিএম, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সময়ের ভাবনা | সময়ের খেয়ায় যারা কান্ডারী

  • আপডেট সময় : ০৫:০০:০৯ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • ৯৫৮

                     কলম।। ইমেজ সংগৃহীত 

নূরুদ্দীন দরজী: ‘সময়ের খেয়া’ সাহিত্যের ছোটকাগজটি যখন আত্মপ্রকাশ করলো তখন বলতে গেলে দুঃসময়। ইন্টারনেটের বহুবিধ ব্যবহার,সংস্কৃতির মাঝে কিছু অপসংস্কৃতি ঢুকে মানুষের মন মানসিকতার ব্যাপক পরিবতর্ন এনে দিয়েছে। পাঠক সমাজ এখন অনেকটাই উদাসীন। ফেসবুক ও ইউটিউবে হাজার হাজার লেখা কথিকা,আনন্দ গান মানুষের মনকে করে ফেলেছে সন্দিহান। কোনটি সঠিক অথবা কোনটি নয় এমন দ্বিধাদ্বন্দ্বের দোলাচলে আমাদের চলতে হয়। বিচার বিশ্লেষণ করতেই সময় চলে যায়। এর‌ই মাঝে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী মানুষের পড়াশোনা ও লেখালেখির জগতকে সংকোচন করেছে । অনেক সুবুদ্ধ লেখক ও পাঠক করোনার তান্ডবে হারিয়ে গেছেন। পত্রিকা, সাময়িকী ও ম্যাগাজিনের সংখ্যা কমে গেছে অথবা কমে গেছে সার্কুলেশন। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়ে পড়েছে। নতুন পত্রিকা বের হ‌ওয়া বলতে গেলে বিরল ঘটনা। আবার যা কিছু আসছে তার বাজার পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এক‌ই লেখা বারবার আসায় পাঠক আগ্ৰহ কমে গেছে ।

এ দুঃসময়ে বাংলাদেশের লেখক, কবি সাহিত্যিকগণকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার কিছুটা সহায়ক হ‌ওয়ার জন্য ‘সময়ের খেয়া’র আত্মপ্রকাশ এক যুগান্তকারী ঘটনা। এ সাময়িকের একান্ত অভিপ্রায় কীভাবে বাঙালি লেখক কবি সাহিত্যিকগণকে আবহমানকালের ধারায় ফিরিয়ে এনে এগিয়ে নেওয়া যায়। ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধের মাথায় চড়ে বসে পাঠকের মনে মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে।

সকল সৃষ্ট সমস্যা দূর করতে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের লেখায় থাকতে হবে সাধারণ মানুষের কথা। প্রকাশ করতে হবে নতুন ভাবের কবিতা। আকৃষ্ট করতে হবে পাঠকগণকে মজাদার পাঠের আবেশে। অতীত নিয়ে বেশি বেশি মাখামাখি নয়। যদিও অতীতকে বর্তমান বিশ্লেষণে এনে তা দ্বারা ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবে। নতুন তথ্যে ,শুদ্ধ বানানে,শব্দ চয়ন ও বাক্য গঠনে কৌশলী হতে হবে। কবিতায় থাকবে আকর্ষণীয় শব্দের সমাহার ও সহজ ভাষা। বাংলা ভাষার সোয়া লক্ষাধিক শব্দের সবগুলোই কবিতায় ব্যবহার করতে হবে- তা নয়। কবিদের শব্দ ভান্ডার স্বতন্ত্র। কবিরা জানেন কোন কোন শব্দ ব্যবহার করে কবিতা লিখলে পাঠকদের মন স্পর্শ করা যাবে। বাহুল্যতা দেখিয়ে খুব বড় বড় কবিতা লিখে পাঠকগণকে বিরক্ত না করানোই শ্রেয়। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে বর্তমান পাঠক সমাজের মন খুবই চঞ্চল। মোটামুটি ৫০-৬০টি শব্দ ব্যবহার করেই একটি সুন্দর কবিতা লেখা যায়। একশত বা সোয়া শত শব্দের কবিতা অনেক বড় হয়। গল্প, ছোট গল্প বা প্রবন্ধের আকার ও বর্তমান সময়ে যতটা ছোট করা যায় লক্ষ্য রাখতে হবে। গল্পে কাহিনি অবশ্যই পাঠক হৃদয়ে ঝড় তোলার মত বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। মিথ্যার প্রলেপ থেকে সত্য বের করে আনতে হবে। সত্য দিয়ে সত্য বিশ্লেষণ করতে হবে মনের রং ও মাধুরী মিশিয়ে।

আমরা জানি কবি, সাহিত্যিক ও লেখকগণের মন অনেক বড় হয়। তাঁদের ভাষা থাকে ঐশ্বর্যমন্ডিত। তাঁদের দেখলেই একটি স্বাতন্ত্র্যের সৃষ্টি হয় মনের কোণে আলোর ঝলকানি আসে আর সুগন্ধ ঝরে। প্রকৃতির সাথে তারের বসবাস। মন্দের বিরুদ্ধে, দূর্বৃত্তের বিরুদ্ধে কবি লেখকগণকে সংগ্রাম করতে হয়। আবার কবিরাই চাঁদের সঙ্গে, ফুলের সঙ্গে, জোছনা, সঙ্গীত, চিত্র কলা,ঝলমলে প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি করে। কবিদের মন সীমানা পেরিয়ে সাত সমুদ্র তের নদী ছাড়িয়ে আকাশের চেয়ে ও বড় হয়ে সুদূর নীল আকাশে উড়ে বেড়ায়।

‘সময়ের খেয়া’র মাধ্যমে এমন মানুষ তৈরি করতে হবে যারা সদা সর্বদা লড়াই করবে অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। অনেক মানুষই লেখালেখি করে। কিন্তুু সবার লেখা পৃথিবীতে বেঁচে থাকে না। শুধু তাঁদের লেখাই বেঁচে থাকে যারা মনের দিক দিয়ে ঐশ্বর্যশালী ও সমৃদ্ধতর। যাদের হৃদয়ে আছে অন্তহীন সৌন্দর্য, দীপ্তি ও আলো। যাদের মনমানসিকতা ত্যাগের মহিমাম ভাস্বর। এখন প্রায়ই শুনতে হয়- মানুষের লেখাপড়া না করার কথা। আমরা যারা ‘সময়ের খেয়া’য় লেখালেখি করবো তাঁদের ইচ্ছে ও প্রত্যাশা হোক এ সাহিত্য সাময়িকী হবে আমাদের প্রাণের সাময়িকী। এ ছোট কাগজ সাহিত্য সাময়িকী ‘সময়ের খেয়া’ হবে আমাদের সুবাসিত ফুলের বাগান। এর মাধ্যমে আমরা দূর করতে চেষ্টা করবো পৃথিবীর সকল কালিমা।
কিন্তু আমাদের চলার পথ মসৃণ নয় কঠিন ও দুরূহ । সম্মুখে আসবে নানাবিধ সমস্যা আর জটিলতা। আমাদের নিয়ে ঠাট্রা মশকরা করার লোকের অভাব হবেনা। হবো অবহেলার পাত্র। বিশ্ব সাহিত্য জগতে যারা প্রখ্যাত ও বিখ্যাত হয়েছেন তারা প্রায় অনেকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। তাঁদেরকে অনেক লাঞ্চনা গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে, দুঃখ বেদনা পেতে হয়েছে। পৃথিবীতে এমন অনেক কবি সাহিত্যিক আছেন যারা জীবদ্দশাতে কবি বা লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় কবি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ জমিদার বংশে জন্ম নিয়ে ও সাহিত্যে পথ চলতে অনেক দুঃখকষ্ট পেয়েছেন যা তিনি নিজেই স্বীকার করে গেছেন। তাঁর আপন মেয়ে জামাতা কবিকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কথাবার্তা বলতেন, উপহাস করা হতো।

১৯১৩ সালের কবির নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিতে সংবর্ধনা দেওয়া সভায় দাঁড়িয়ে তিনি অতীত দুঃখ যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘আমি এই সম্মানের পাত্রকে ওষ্ঠ পর্যন্ত তুলবো- কিন্তু গলা অবধি ঢুকতে দিবো না।’

আমরা জানি কবির প্রাপ্ত পদকটি চুরি হয়ে গিয়েছিলো। সুতরাং লেখক হতে হলে সকল দুঃখকে মনে চেপে রাখতে হয়। কবি সাহিত্যিকগণ দুর্গম চরম সময়ের প্রতিবাদ করেন তাঁদের কলমের দ্বারা। একরাশ মেঘ পুঞ্জ সমান দুঃখ যখন মনে আঘাত হানে তখন তার যন্ত্রণায় যে প্রসব ঘটে তাই কবিতা,তাই সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথই বলেছেন, ‘তরঙ্গ মিলায়ে যার তরঙ্গ উঠে/ কুসুম ঝরিয়া পড়ে কুসুম ফুটে।’

তিনি আর ও বলেছেন, “আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে/তবু শান্তি, তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে।’ সেই অনন্তের পথে ‘সময়ের খেয়া’র যাত্রীগণ চলবেন নির্বিকার। “সময়ের খেয়া’ হবে সুনাগরিক তৈরির অন্যতম সাময়িকী।

লেখক : কবি ও সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার।

সময়ের ভাবনা | সময়ের খেয়ায় যারা কান্ডারী

আপডেট সময় : ০৫:০০:০৯ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

                     কলম।। ইমেজ সংগৃহীত 

নূরুদ্দীন দরজী: ‘সময়ের খেয়া’ সাহিত্যের ছোটকাগজটি যখন আত্মপ্রকাশ করলো তখন বলতে গেলে দুঃসময়। ইন্টারনেটের বহুবিধ ব্যবহার,সংস্কৃতির মাঝে কিছু অপসংস্কৃতি ঢুকে মানুষের মন মানসিকতার ব্যাপক পরিবতর্ন এনে দিয়েছে। পাঠক সমাজ এখন অনেকটাই উদাসীন। ফেসবুক ও ইউটিউবে হাজার হাজার লেখা কথিকা,আনন্দ গান মানুষের মনকে করে ফেলেছে সন্দিহান। কোনটি সঠিক অথবা কোনটি নয় এমন দ্বিধাদ্বন্দ্বের দোলাচলে আমাদের চলতে হয়। বিচার বিশ্লেষণ করতেই সময় চলে যায়। এর‌ই মাঝে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী মানুষের পড়াশোনা ও লেখালেখির জগতকে সংকোচন করেছে । অনেক সুবুদ্ধ লেখক ও পাঠক করোনার তান্ডবে হারিয়ে গেছেন। পত্রিকা, সাময়িকী ও ম্যাগাজিনের সংখ্যা কমে গেছে অথবা কমে গেছে সার্কুলেশন। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়ে পড়েছে। নতুন পত্রিকা বের হ‌ওয়া বলতে গেলে বিরল ঘটনা। আবার যা কিছু আসছে তার বাজার পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এক‌ই লেখা বারবার আসায় পাঠক আগ্ৰহ কমে গেছে ।

এ দুঃসময়ে বাংলাদেশের লেখক, কবি সাহিত্যিকগণকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার কিছুটা সহায়ক হ‌ওয়ার জন্য ‘সময়ের খেয়া’র আত্মপ্রকাশ এক যুগান্তকারী ঘটনা। এ সাময়িকের একান্ত অভিপ্রায় কীভাবে বাঙালি লেখক কবি সাহিত্যিকগণকে আবহমানকালের ধারায় ফিরিয়ে এনে এগিয়ে নেওয়া যায়। ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধের মাথায় চড়ে বসে পাঠকের মনে মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে।

সকল সৃষ্ট সমস্যা দূর করতে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের লেখায় থাকতে হবে সাধারণ মানুষের কথা। প্রকাশ করতে হবে নতুন ভাবের কবিতা। আকৃষ্ট করতে হবে পাঠকগণকে মজাদার পাঠের আবেশে। অতীত নিয়ে বেশি বেশি মাখামাখি নয়। যদিও অতীতকে বর্তমান বিশ্লেষণে এনে তা দ্বারা ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবে। নতুন তথ্যে ,শুদ্ধ বানানে,শব্দ চয়ন ও বাক্য গঠনে কৌশলী হতে হবে। কবিতায় থাকবে আকর্ষণীয় শব্দের সমাহার ও সহজ ভাষা। বাংলা ভাষার সোয়া লক্ষাধিক শব্দের সবগুলোই কবিতায় ব্যবহার করতে হবে- তা নয়। কবিদের শব্দ ভান্ডার স্বতন্ত্র। কবিরা জানেন কোন কোন শব্দ ব্যবহার করে কবিতা লিখলে পাঠকদের মন স্পর্শ করা যাবে। বাহুল্যতা দেখিয়ে খুব বড় বড় কবিতা লিখে পাঠকগণকে বিরক্ত না করানোই শ্রেয়। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে বর্তমান পাঠক সমাজের মন খুবই চঞ্চল। মোটামুটি ৫০-৬০টি শব্দ ব্যবহার করেই একটি সুন্দর কবিতা লেখা যায়। একশত বা সোয়া শত শব্দের কবিতা অনেক বড় হয়। গল্প, ছোট গল্প বা প্রবন্ধের আকার ও বর্তমান সময়ে যতটা ছোট করা যায় লক্ষ্য রাখতে হবে। গল্পে কাহিনি অবশ্যই পাঠক হৃদয়ে ঝড় তোলার মত বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। মিথ্যার প্রলেপ থেকে সত্য বের করে আনতে হবে। সত্য দিয়ে সত্য বিশ্লেষণ করতে হবে মনের রং ও মাধুরী মিশিয়ে।

আমরা জানি কবি, সাহিত্যিক ও লেখকগণের মন অনেক বড় হয়। তাঁদের ভাষা থাকে ঐশ্বর্যমন্ডিত। তাঁদের দেখলেই একটি স্বাতন্ত্র্যের সৃষ্টি হয় মনের কোণে আলোর ঝলকানি আসে আর সুগন্ধ ঝরে। প্রকৃতির সাথে তারের বসবাস। মন্দের বিরুদ্ধে, দূর্বৃত্তের বিরুদ্ধে কবি লেখকগণকে সংগ্রাম করতে হয়। আবার কবিরাই চাঁদের সঙ্গে, ফুলের সঙ্গে, জোছনা, সঙ্গীত, চিত্র কলা,ঝলমলে প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি করে। কবিদের মন সীমানা পেরিয়ে সাত সমুদ্র তের নদী ছাড়িয়ে আকাশের চেয়ে ও বড় হয়ে সুদূর নীল আকাশে উড়ে বেড়ায়।

‘সময়ের খেয়া’র মাধ্যমে এমন মানুষ তৈরি করতে হবে যারা সদা সর্বদা লড়াই করবে অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। অনেক মানুষই লেখালেখি করে। কিন্তুু সবার লেখা পৃথিবীতে বেঁচে থাকে না। শুধু তাঁদের লেখাই বেঁচে থাকে যারা মনের দিক দিয়ে ঐশ্বর্যশালী ও সমৃদ্ধতর। যাদের হৃদয়ে আছে অন্তহীন সৌন্দর্য, দীপ্তি ও আলো। যাদের মনমানসিকতা ত্যাগের মহিমাম ভাস্বর। এখন প্রায়ই শুনতে হয়- মানুষের লেখাপড়া না করার কথা। আমরা যারা ‘সময়ের খেয়া’য় লেখালেখি করবো তাঁদের ইচ্ছে ও প্রত্যাশা হোক এ সাহিত্য সাময়িকী হবে আমাদের প্রাণের সাময়িকী। এ ছোট কাগজ সাহিত্য সাময়িকী ‘সময়ের খেয়া’ হবে আমাদের সুবাসিত ফুলের বাগান। এর মাধ্যমে আমরা দূর করতে চেষ্টা করবো পৃথিবীর সকল কালিমা।
কিন্তু আমাদের চলার পথ মসৃণ নয় কঠিন ও দুরূহ । সম্মুখে আসবে নানাবিধ সমস্যা আর জটিলতা। আমাদের নিয়ে ঠাট্রা মশকরা করার লোকের অভাব হবেনা। হবো অবহেলার পাত্র। বিশ্ব সাহিত্য জগতে যারা প্রখ্যাত ও বিখ্যাত হয়েছেন তারা প্রায় অনেকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। তাঁদেরকে অনেক লাঞ্চনা গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে, দুঃখ বেদনা পেতে হয়েছে। পৃথিবীতে এমন অনেক কবি সাহিত্যিক আছেন যারা জীবদ্দশাতে কবি বা লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় কবি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ জমিদার বংশে জন্ম নিয়ে ও সাহিত্যে পথ চলতে অনেক দুঃখকষ্ট পেয়েছেন যা তিনি নিজেই স্বীকার করে গেছেন। তাঁর আপন মেয়ে জামাতা কবিকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কথাবার্তা বলতেন, উপহাস করা হতো।

১৯১৩ সালের কবির নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিতে সংবর্ধনা দেওয়া সভায় দাঁড়িয়ে তিনি অতীত দুঃখ যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘আমি এই সম্মানের পাত্রকে ওষ্ঠ পর্যন্ত তুলবো- কিন্তু গলা অবধি ঢুকতে দিবো না।’

আমরা জানি কবির প্রাপ্ত পদকটি চুরি হয়ে গিয়েছিলো। সুতরাং লেখক হতে হলে সকল দুঃখকে মনে চেপে রাখতে হয়। কবি সাহিত্যিকগণ দুর্গম চরম সময়ের প্রতিবাদ করেন তাঁদের কলমের দ্বারা। একরাশ মেঘ পুঞ্জ সমান দুঃখ যখন মনে আঘাত হানে তখন তার যন্ত্রণায় যে প্রসব ঘটে তাই কবিতা,তাই সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথই বলেছেন, ‘তরঙ্গ মিলায়ে যার তরঙ্গ উঠে/ কুসুম ঝরিয়া পড়ে কুসুম ফুটে।’

তিনি আর ও বলেছেন, “আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে/তবু শান্তি, তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে।’ সেই অনন্তের পথে ‘সময়ের খেয়া’র যাত্রীগণ চলবেন নির্বিকার। “সময়ের খেয়া’ হবে সুনাগরিক তৈরির অন্যতম সাময়িকী।

লেখক : কবি ও সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার।