
চারিদিকে আজ হচ্ছে মিছিল
দাবি আদায়ের তরে,
সেই মিছিলে পুলিশের গুলিতে
খোকার রক্ত ঝরে।
হঠাৎ ব্যাথা শুরু হলো
মায়ের হৃদয় জুড়ে,
মিছিলের ডাকে দিয়ে সমর্থন
খোকা গেছে মরে ।
শহীদ খোকা রাজপথে আছে
জানে না মা নিজে,
মায়ের মনটা করছে ছঠপট
বেহুঁশ খোকার খুঁজে।
পথচারীদের বলছে ডেকে
আমার খোকা কোথায় গেছে,
হঠাৎ করে হৃদয় খানি মোর
কি যেনো হারিয়েছে।
অশ্রুসিক্ত নয়ন মায়ের
পথ চেয়ে আছে,
অন্যদিকে রঞ্জিত রাজপথ
খোকার রক্তে ভিজে।
আসবে খোকা বাড়ি ফিরে
খাবে মায়ের হাতে,
খাবার নিয়ে অপেক্ষিত মা
খাবে খোকার সাথে।
দলে- দলে লোকজন আসছে
খোকার বাড়ির দিকে,
এমন একটি দৃশ্য পরলো
খোকার মায়ের চোখে।
সেই দলেতে নাই তার খোকা
একটি কফিন আছে,
গভীর ঘুমে সেই কফিনে
খোকা ঘুমিয়ে আছে।
চিৎকার করে বললো মায়ে
আপনারা কারা বলেন?
আমার খোকা বাড়িতে নাই
আপনারা কি দেখেছেন?
সকাল থেকে এদিক ওদিক
খোকা কে পাচ্ছি না খুঁজে,
খোকা ছাড়া মনটা আমার
কিছুই নাহি বুঝে।
খায়নি খাবার বেরিয়েছে খোকা
সেই যে সকাল সাজে,
এখনো খোকা আসেনি ফিরে
আমার বুকের মাঝে।
খোকার মায়ের আহাজারিতে
চুপি-চুপি সবাই কাঁদছে,
বলতে পারছে না মায়ের কাছে
খোকা নাই তার বেঁচে।
মায়ের খোকা হয়েছে শহীদ
স্বৈরাচারের গুলিতে,
কফিনের ভিতর রক্তাক্ত লাশ
এসেছে মায়ের কাছে।
হঠাৎ মায়ে প্রশ্ন করলো
কাঁদছো কেন বলো,
আমার খোকার কি হয়েছে
তোমরা কি তা জানো?
কিছু মানুষ জবাবে বললো,
খোকা মোদের সাথে,
কফিনের ভিতরে মাগো তোমার
খোকা ঘুমিয়ে আছে।
মা বললো কফিনে কেনো
ঘুমাবে আমার বুকে,
খোকা ছাড়া নিঃস্ব আমি
কেমনে থাকবো বেঁচে?
কফিন খুলে দেখলো মায়ে
রক্তাক্ত খোকার লাশ,
চিৎকার দিয়ে বলল মায়ে
কে করল সর্বনাশ?
আমার খোকার মুখের হাসি
কে নিয়েছে কেড়ে,
কোন অপরাধে খোকার বুকে
তাজা রক্ত ঝরে।
খোকার মৃত্যুতে শূন্য হলো
দূখিনী মায়ের কোল,
মায়ের ঘরে ছিলো খোকা
একটি নিষ্পাপ ফুল।
অবাক পৃথিবী হয়েছে স্তব্ধ
খোকার মায়ের আহাজারিতে,
অজ্ঞান হয়েছে মা জননী
কলিজা যেন তার গিয়েছে ফেটে।
শশারকান্দা গ্রাম,শাল্লা উপজেলা, সুনামগঞ্জ।