
(মোবাইলে রিংটোন বেজে ওঠতেই স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে ফোন নম্বরটি দেখে চিনতে পারে রাজু।)
রাজু: হ্যালো!
রেবা: কেমন আছো রাজু?
রাজু: আমি ভালো আছি রেবা, তুমি কেমন আছো?
রেবা: আমিও ভালো আছি বন্ধু। তুমি তো বলেছিলে আমার বাসায় আসবে।
রাজু: অবশ্যই আসবো বন্ধু।
রেবা: তো কবে নাগাদ আসছো?
রাজু: আগামী রোববার আসি?
রেবা: ঠিক আছে, আমি তোমার অপেক্ষায় থাকব কিন্তু!
রাজু: ওকে, তবে তোমার কাছে আসার পর কিন্তু—- না করতে পারবে না, ঠিক আছে?
রেবা: কী যে বলো! —- না করব কেন; তুমি অফার করার পর তো আমি রাজি হইছি, তাই না?
রাজু: হ্যাঁ বন্ধু।
(মোবাইল ফোন পকেটে রাখতে রাখতে রাজুর স্বগোতক্তি : রেবার সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়, তাও খুব বেশিদিন নয়; মাত্র ১৫ দিন হবে। এর মধ্যেই তাকে পটিয়ে ফেলেছি, সে আমার—- প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেছে। বাহ্ কী দারুণ ভাগ্য আমার! তাছাড়া তার আর আমার বয়সেও অনেক ব্যবধান। তার বয়স কত হবে- ১৮-১৯!)
রেবা: হ্যালো রাজু তুমি কই?
রাজু: আমি এখন বাসে আছি, তোমার কাছে আসতে আনুমানিক আধাঘণ্টা লাগবে বন্ধু।
রেবা: ওকে!—– (সুমিষ্ট কণ্ঠ তার)।
(তিনতলা ফ্ল্যাটে উঠে দরজায় নক করার সাথে সাথে রেবা দরজা খুলে দেখে রাজু, অপরূপ সাজে সজ্জিত রেবা)।——–
রেবা: রাজু তুমি এসেছো, দুটি থ্রি পিস, এতোগুলো মিষ্টি, চকোলেট কার জন্য এনেছো?
রাজু: তোমার জন্য।
রেবা: বলো কী! এসব আনার কী প্রয়োজন ছিলো! ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় বসে আরাম করো, আমি তোমার জন্য চা নাস্তার ব্যবস্থা করছি।
রেবা: নাও নাস্তা করো। (ট্রেতে চা, ফলমুল রাখল)।
রাজু: এসবের কী দরকার ছিল! ঠিক আছে আমি শুধু চা পান করছি। অন্যগুলো তুমি খাও!——
রাজু: রেবা এতো দূরে বসে আছো কেনো, আমার কাছে এসে বসো লক্ষ্মী!
রেবা: ঠিক আছে, এই যে তোমার সাথে ঘেঁষে বসলাম, এবার খুশি হয়েছো?
রাজু: আরে খুশি মানে, মহা খুশি হয়েছি, তোমার কাছে এসে আমি সার্থক—–!
(দরজায় সজোরে থাপ্পড়ের আওয়াজ শুনে রেবা এসে দরজা খোলে, সাথে সাথে ৪ যুবক রুমে ঢুকে পড়ে, এদের মধ্যে ২ জন ডিবি পুলিশ, ২ জন মাস্তান, তাদের দেখে রাজু আতঙ্কিত হয়ে যায়, সে কী করবে- কিছুই বুঝতে পারছে না)।
কালু মাস্তান: এই বান্দির পুত এখানে কী করস? (রাজু’র শার্টের কলার চেপে ধরে)।
রাজু: রেবা আমার আত্মীয়, তার কাছে বেড়াতে এসেছি।
কালু: হাছা কথা ক, নাইলে এই ছুরি তোর বুকের মধ্যে হান্দাইয়া দিমু কইলাম।
(রাজু নিশ্চুপ)।
২য় যুবক: এই শালা মাইয়া মানুষের সাথে ফুর্তি করতে আইছো? অহন দুইডারে এক লগে ভিডিও কইরা ফেসবুকে দিয়া দিমু! এই ছেমরি তুই এই বেডার লগে খাড়া।
রাজু: আপনাদের দোহাই লাইগে, এ কাজ করবেন না, আমার বাড়িতে বউ বাচ্চা এবং আত্মীয় স্বজন আছে, তারা এসব জানলে আমি মুখ দেখাতে পারব না।
কালু: তয় এক লাখ টাকা দে, ছাইড়া দিমু।
রাজু: আমার কাছে ১০ হাজার টাকা আছে।
কালু: তুই ফিরে যেতে চাইলে পুরা এক লাখ টাকাই দিতে অইব!
রাজু: বিশ্বাস করেন আমার সাথে আর কোন টাকা নেই।
ডিবি পুলিশদ্বয়: আলামিন সাব, এ বেটার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে অফিসে নিয়ে চলুন, শালার লুচ্চামি ছুটিয়ে দেই!
রাজু: স্যার আপনাদের পায়ে ধরি, আজকের মতো আমাকে মাফ করে দিন, আর জীবনেও এমন ভুল করব না!
(এতক্ষণ রেবা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল, এখন সে প্রতিবাদী)।
রেবা: এই ভদ্রলোক আমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে, কিন্তু আপনারা এসব শুরু করেছেন কেন?
কালু: এই ছেমরি তুই চুপ কর! বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকেও খেসারত দিতে হবে।
(ধমক খেয়ে চুপসে গেলো রেবা)।
রাজু: বাবারা তোমরা এই ১০ হাজার টাকা আর আমার ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোনটা রেখে আমাকে ছেড়ে দাও?
কালু: না হবে না, তয় এক কাজ কর, ২০ হাজার টাকা বিকাশে এনে মোট ৩০ হাজার টাকা আর মোবাইল দিয়ে চলে যা।
(রাজু রাজি হয়ে তাই করলো এবং তাদের হাত থেকে বাঁচলো। রাজু চলে যাওয়ায় পর রেবাসহ সবাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে হাসাহাসি করে)।
কালু: রেবা তর অভিনয়টা খুব সুন্দর হইছে, তোরে আইজ ভাগে কিছু টেহা বেশি দিমু, কী বলিস?
রেবা: তোমাদের অভিনয়ও খারাপ হয়নি কিন্তু! এভাবে কয়েকটি অপারেশন করতে পারলে বড়লোক হতে বেশি সময় লাগবে না।
রচনাকাল : জুলাই ২০২৪